একটা সুন্দর পরিকল্পনা হয়তো পরিবর্তন করে দিতে পারে আপনার জীবন
নিজে আমল করুন অন্যকে আমল করার জন্য উৎসাহিত করুন
শেয়ার করুন যত পারেন। এইটাও ইনশাআল্লাহ আমলের অংশ হয়ে যাবে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর অশেষ রহমতে আরো একটি রমজানের দ্বারে এসে পৌছালাম। আলহামদুলিল্লাহ। মৃত্যুর বিশ্বাষ নেই একটি সেকেন্ডেরও। হয়তো পোস্টটি লিখার পর আমিও ইন্তেকাল করতে পারি। হয়তো মাহে রমজানের দিনগুলো এই গুনাহগার বান্দার ভাগ্যে ঝুটতে নাও পারে যদি ইন্তেকাল করি। আল্লাহ আমাকে নেক হায়াত দিক এই আসন্ন রমজানে যেন বেশি বেশি আমল করতে পারি, সকলেই দোয়া করবেন আমার জন্যে।
হয়তো অনেকেই এই পোস্টটি যখন পড়ছেন, তখন হয়তো মাহে রমজানের দিন অতিবাহিত হচ্ছে।
আমরা প্রায় সময় দেখি, অনেকেই নিয়ত করি রমজান থেকে নিয়মিত নামায পড়বো, কোরআন পড়বো, কিন্তু বস্তুত আসলে হয় না বিষয়টা। এক্ষেত্রে আমাদের কিছু করতে হবে যারা আপনারা রেগুলার নামাজের সাথে যুক্ত, আমলের সাথে যুক্ত। মুল কথা যদি বলি, আমরা অনেকেই আছি যারা নিজেরা ইবাদত করি কিন্তু অন্যকে ইবাদত করতে উৎসাহিত করি না। কিন্তু এই বিষয়টাই যদি আমরা ঠিক করতে পারি, তাহলে হয়তো বেশি নামাজি লোক বের করে নিয়ে আসতে পারবো ইনশাআল্লাহ।
::::::যে পরিকল্পনা নিয়ে আমার এই পোস্ট:::::::
আপনাদের মধ্যে যারা যারা নামাজী ভাইয়েরা আছেন, আপনাদের একটা করনীয় কাজ হতে পারে আসন্ন রমজানে আপনার আশে পাশের প্রত্যেক ভাই বোনকে নামাজের জন্য দাওয়াত করা। অনেকেই দেখবেন নামাজের সময়ে মসজিদের সামনে দিয়ে ঘুরে চলে যায়। সালাতের জন্য আযান দেওয়া সত্বেও নামাজের দিকে অগ্রসর হয় না। আমাদের মধ্যে নিয়মিত নামাজী যেই সব ভাইয়েরা আছি, যদি নামাজের (জামাত শুরু হবার 5 মিনিট) আগে মসজিদের সামনে দাড়িয়ে, যেখানে মানুষজন হাটা হাটি করে, সেখানে প্রত্যেক মসজিদ ডিঙিয়ে যাওয়া লোকদের যদি নামাজের জন্য দাওয়াত করি, তাহলে হয়তো নামাজে তার মন আসতে পারে। আল্লাহ হেদায়েত করলে সব কিছুই সম্ভব।
এমন হতে পারে, রাস্তা দিয়ে যাবার সময় যাদের দেখবো মসজিদগামী না, বা কাজে কর্মে ব্যস্ত তাদের যেতে যেতে দাওয়াত করতে পারি নামাজের জন্য।
এলাকার ছোট বড় ভাই বা বন্ধুদের আমরা বলতে পারি, নামাজের জন্য, কোরআন তিলাওয়াত করার জন্য। রোজা রাখার জন্য।
তাদের রমজানের ফজিলত সম্পর্কে অবগত করতে পারি। রমজানের বিভিন্ন আমলগুলো সম্পর্কে অবগত করতে পারি। এতে করে তাদের হয়তো আল্লাহ রহম করতেই পারেন।
নামাজ, রোজা আর কুরআন তিলাওয়াতের জন্য তাগিদ দিতে পারি নিজের পরিবার বর্গের মাঝে। ভাই বোন সবার মাঝে।
এতে আপনার লাভ কি হতে পারে সেটা মনে হয় আর বলতে হবে না। আলহামদুলিল্লাহ। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আপনাকে কেমন পুরস্কারে পুরস্কিত করতে পারেন, তার ধারনা আপনার এই ছোট্ট মাথায় আসবে বলে মনে হয় না।
তো এই রমজানে আপনাদের কি কি করনীয় নিশ্চয় আর বলার দরকার নাই।
(তবে আমার দ্বীনি ভাই Mam Shuman ভাইয়ের ওয়াল থেকে একটা পোস্ট কপি করে দিলাম। আশা করছি সবার কাজে লাগবে।
রমজান মাস উপলক্ষে নিজের জন্য রিমাইন্ডার হিসাবে মাট ৪ টা হাদিস সামনে রাখলাম !)
আল্লাহ এই পবিত্র মাসকে আমার/আমাদের জন্য গূনাহ মাফের ওয়াসিলা বানিয়ে নিন !
১)
«وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ أَتَى عَلَيْهِ شَهْرُ رَمَضَانَ فَلَمْ يُغْفَرْ لَهُ ، وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ»
‘‘যে ব্যক্তি রমাদান মাস পেলো অথচ তার গুনাহ মাফ করাতে পারল না সে ধ্বংস হোক’’ [শারহুস সুন্নাহ : ৬৮৯]।
২) আব্দুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ বলেছেন :
إِنَّ الْمُؤْمِنَ يَرَى ذُنُوبَهُ كَأَنَّهُ فِي أَصْلِ جَبَلٍ يَخَافُ أَنْ يَقَعَ عَلَيْهِ وَإِنَّ الْفَاجِرَ يَرَى ذُنُوبَهُ كَذُبَابِ وَقَعَ عَلَى أَنْفِهِ فَقَالَ لَهُ هكَذَا فَطَارَ.
“মুমিন ব্যক্তি তাঁর পাপকে খুব বড় করে দেখেন, যেন তিনি পাহাড়ের নিচে বসে আছেন, ভয় পাচ্ছেন, যে কোনো সময় পাহাড়টি ভেঙ্গে তাঁর উপর পড়ে যাবে। আরা পাপী মানুষ তার পাপকে খুবই হালকাভাবে দেখেন, যেন একটি উড়ন্ত মাছি তার নাকের ডগায় বসেছে, হাত নাড়ালেই উড়ে যাবে।” বুখারী (৮৩-কিতাবুদ দাআওয়াত, ৪-বাবুত তাওবাহ) তিরমিযী (৩৮-কিতাব সিফাতিল কিয়ামাহ, ১৫-বাব..সিফাত আওয়ানিল হাওয)
৩)
হযরত আবু হুরাইরা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ বলেছেন :
وَاللهِ إِنِّي لأَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ فِي الْيَوْمِ أَكْثَرَ مِنْ سَبْعِينَ مَرَّةً.
“আল্লাহর কসম! আমি দিনের মধ্যে ৭০ বারেরও বেশি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই এবং তাওবা করি।” বুখারী (৮৩-কিতাবুদ দাআওয়াত, ৩-বাব ইসতিগফারিন নাবিয়্যি) ৫/২৩২৪
৪)
মুমিন যে কোনো ভাষায় আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন। ভাষা বা বাক্যের চেয়ে মনের অনুশোচনা ও আবেগ বেশি প্রয়োজনীয়। তবে রাসূলুল্লাহ -এর শেখানো বাক্য ব্যবহার করা উত্তম।
এক টি হাদিস মতে সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার হচ্ছে-
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لا إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِيْ وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِيْ فَاغْفِرْ لِيْ فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা, আনতা রাব্বী, লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা, খালাক্বতানী, ওয়াআনা ‘আবদুকা, ওয়াআনা ‘আলা- ‘আহদিকা ওয়াওয়া‘অ্দিকা মাস তাতা‘অ্তু। আ‘ঊযু বিকা মিন শাররি মা- স্বানা‘তু, আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়্যা, ওয়াআবূউ লাকা বিযামবি। ফাগ্ফিরলী, ফাইন্নাহু লা- ইয়াগফিরুয যুনূবা ইল্লা- আনতা।
অর্থ: “হে আল্লাহ, আপনি আমার প্রভু, আপনি ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমি আপনার বান্দা। আমি আপনার কাছে প্রদত্ত অঙ্গিকার ও প্রতিজ্ঞার উপরে রয়েছি যতটুকু পেরেছি। আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি আমি যে কর্ম করেছি তার অকল্যাণ থেকে। আমি আপনার কাছে প্রত্যাবর্তন করছি আপনি আমাকে যত নিয়ামত দান করেছেন তা-সহ এবং আমি আপনার কাছে প্রত্যাবর্তন করছি আমার পাপ-সহ। অতএব, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আপনি ছাড়া কেউ পাপ ক্ষমা করতে পারে না।” সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩০৬।
ফযিলাত: ‘‘যে কেউ দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে দিনের বেলা এই দু‘আটি (সাইয়েদুল ইসতিগফার) পাঠ করবে ঐ দিন সন্ধ্যা হওয়ার আগে মৃত্যু বরণ করলে সে জান্নাতবাসী হবে এবং যে কেউ ইয়াকিনের সাথে রাত্রিতে পাঠ করবে ঐ রাত্রিতে মৃত্যুবরণ করলে সে জান্নাতবাসী হবে।’’ [সহীহ আল-বুখারী : ৬৩০৬]
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সকলকেই এই রমজানে কবুল করুন। আমাদের সকল গুনাহ ক্ষমা করুন। আমাদের ইমানকে মজবুত করে দিন। আমলের বরকত বাড়িয়ে দিন। আল্লাহ আমাদের প্রতিটি রোজা রাখার তৌফিক দান করুন। রমাজানের সাথে সাথে যেন ফরজ সকল ইবাদতও অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে পারি সেই তৌফিক দান করুন। রোজার সকল হকগুলো যেন পুরন করতে পারি। এই কামনা। আল্লাহ হাফিজ
স্বাগতম হে মাহে রমজান
Shared text